
নিজস্ব প্রতিবেদক : আওয়ামী ফ্যাসিবাদী সরকারের আমলে বিএনপির রাজনীতি করার অপরাধে আমাকে জেলে যেতে হয়েছে ৭ বার নানান নির্যাতনের ভেতর দিয়ে পার করতে হয়েছে ১৭ টি বছর।
এখন আবার ৫নং আউচপাড়া ইউনিয়ন সভাপতির পদ থেকে সাময়িক বহিষ্কার করা হলো। কারন একটাই নিজ দলের ভেতরের কুচক্রী মহলের চক্রান্ত।
কথা গুলো বলছিলেন রাজশাহীর বাগমারা উপজেলার ৫নং আউচপাড়া ইউনিয়নের বর্তমান চেয়ারম্যান ডি. এম সাফিকুল ইসলাম সাফি। তিনি একজন জনপ্রিয় ও সফল স্থানীয় জনপ্রতিনিধি হিসেবে সুপরিচিত। তার পিতা বীরমুক্তিযোদ্ধা মরহুম আলহাজ্ব মজিবুর রহমান সাবেক ইউপি সদস্য ও জাতীয়তাবাদী দলের একজন জনপ্রতিনিধি ছিলেন।
তিনি বাগমারা উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক ডি.এম জিয়াউর রহমান জিয়ার আপন ছোট ভাই। বিগত সময়ে ডি. এম জিয়াউর রহমান জিয়াও আউচপাড়া ইউনিয়ন পরিষদের ও বাগমারা উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ছিলেন।
চেয়ারম্যান সাফি বলেন, গত ১৮ আগষ্ট ২০২৫ ইং তারিখে ফিয়ার প্রাইজ ডিলার আমার স্বাক্ষর জাল করে ট্রেড লাইসেন্স ও অন্যান্য নথিপত্র নিয়ে উপজেলা খাদ্য কর্মকর্তার কাছে প্রেরন করে চাল উত্তলন করতে গেলে উপজেলা খাদ্য কর্মকর্তা আমাকে বিষয়টি অবহিত করেন। আমি তাৎক্ষনিক উপজেলা পরিষদে ছুটে গেলে ডিলার নামধারী আওয়ামী সন্ত্রাসীরা পালিয়ে যায়। এমতঅবস্থায় আমি খাদ্য কর্মকর্তার সাথে তাদের বিষয় নিয়ে আলোচনা করি এবং সেখান থেকে চলে আসি। এরপর কিছু বিক্ষুব্ধ জনতা খাদ্য কর্মকর্তার সাথে কথা কাটাকাটি করে এবং এক পর্যায়ে তারাও সেখান থেকে চলে যায়।
এরপর উপজেলা নির্বাহী অফিসারের উপস্থিতিতে উক্ত বিষয়টি নিয়ে আলোচনার মাধ্যমে সমাধান করা হয়। কিন্তু বিষয়টি সমাধানের পরেও গুটি করেকজন সাংবাদিক ওই চক্রের সাথে যোগ সাজিস করে আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করে চলেছেন। আমি জনগনের নায্য অধিকার আদায়ের জন্য জনগনের প্রতিনিধি হিসেবে উপজেলা পরিষদে গিয়েছিলাম। উক্ত বিষয়টির সাথে রাজনৈতিক কোন সংশ্লিষ্ঠতা নেয়। আমি আমার ইউনিয়নের তৃনমূল খেটে খাওয়া মানুষের অধিকার আদায়ের চেষ্টা করেছি মাত্র। আমি কখনোই আমার সংগঠন পরিপন্থী কোন কাজে লিপ্ত হয় নাই এবং ভবিষ্যতেও হবোনা। পরে বিষয়টিকে কেন্দ্র করে বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে জানতে পারি আমাকে ইউনিয়ন বিএনপি’র সভাপতি পদ থেকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়েছে, এ বিষয়ে আমি কোন লিখিত আদেশ পাইনি।
তিনি আরও বলেন, এটি একটি অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা একে কেন্দ্র করে ফ্যাসিবাদের অনুসারীরা আমার ও উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক ডি. এম জিয়াউর রহমান জিয়ার সুনাম ক্ষুণ্ণ করার জন্য বিভিন্ন ভাবে পায়তারা চালাচ্ছে। তাই আমি সকল ষড়যন্ত্রকারী ও পায়তারকারীকে এধরণের কাজ থেকে বিরত থাকার জন্য আহবান জানাচ্ছি। আমি ষড়যন্ত্র করে পৃথিবীতে কাউকে সফল হতে দেখিনি। অচিরেই এই ষড়যন্ত্রকারীদের মুখোশ জনসম্মুখে উন্মোচিত হবে। আমি বিশ্বাস করি সত্যের জয় হবেই।
সাইধারা গ্রামের আব্দুল জলিল বলেন, সাফি চেয়ারম্যান দীর্ঘ ১৭ বছর যাবৎ আওয়ামী ফ্যাস্টিট আমলে বিভিন্ন জুলুম নির্যাতনের মধ্যে দিয়ে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতির দায়িত্ব সৎ নিষ্ঠা ও সাহসিকতার সহিত পালন করেছেন। সেই সময় তার নামে প্রায় ২০ এর অধিক রাজনৈতিক মামলা হয়। তাকে ৭ বার বিনা অপরাধে কারা বরণ করতে হয়েছে। তিনি ২০১৮ সালে অনুষ্ঠিত স্থানীয় সরকার নির্বাচনে বিএনপির মনোনিত ধানের শীষের প্রার্থী হয়ে নির্বাচনে অংশ গ্রহন করেন। সেসময় আওয়ামী লীগের দুই পক্ষের সংঘর্ষে গুলিবিদ্ধ হয়ে ৩ জন মারা যায়। যার সম্পন্ন দ্বায় ভার তার উপর চাপিয়ে দিয়ে পুলিশ বাহিনী তাকে ব্যাপক শারীরিক ও মানুষিক নির্যাতন করে। তারপরও সে রাজনৈতিক কার্যকলাপ সাহসিকতার সহিত চালিয়ে গিয়েছেন। গত ৫ই জানুয়ারি ২০২২ খ্রিঃ অনুষ্ঠিত স্থানীয় সরকার নির্বাচনে বিপুল ভোটের ব্যবধানে তিনি জয় লাভ করেন। বর্তমানে সুনামের শহিত দায়িত্ব পালন করছেন। আমার জানা মতে তিনি কোন দিন সংগঠন পরিপন্থী কোন কাজে লিপ্ত হননি। তারপরেও তাকে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে এটা অত্যান্ত দুঃখজনক ব্যাপার।
সারন্দি গ্রামের ফরিদা পারভিন বলেন, তারা দুই ভাই আওয়ামী ফ্যাসিবাদী সরকারের আমলে ষড়যন্ত্রের শিকার হয়ে ছিলেন। ৫ আগস্ট ২০২৪ এ আওয়ামী ফ্যাসিবাদী সরকার পতনের পর তারা যখন রাজনৈতিক ভাবে সামনের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে, ঠিক তখনই নিজ দলের মধ্যে ঘাপটি মেরে থাকা কিছু ষড়যন্ত্রকারীরা ষড়যন্ত্র করে তাদেরকে বারবার বিপদগামী করার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। এটি ব্যক্তির জন্য ও দলের জন্য অত্যন্ত নিন্দণীয় ও লজ্জাজনক ব্যাপার।
বাহামনী গ্রামের আনজুমান আরা বলেন, চেয়ারম্যান ডিএম সাফিকুল ইসলাম সাফি একজন সমাজ সেবক ও দানবীর এলাকায় তার ব্যাপক সুনাম রয়েছে। তার ভাই ডি. এম জিয়াউর রহমান জিয়া বাগমারা তৃণমূল বিএনপির আস্থা ও ভরসার প্রতীক। আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তার জনপ্রিয়তাকে ঈর্ষান্বিত করে তার মনোনয়নকে প্রশ্নবিদ্ধ করার জন্য একটি কুচক্রী মহল চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।
হাট খুজিপুর গ্রামের মোমিনুল হক বলেন, সাফিকুল ইসলাম সাফি অসহায় মানুষের দুঃখ দূর্দশাগুলো মনোযোগ দিয়ে শোনেন বলে আজও তার জনপ্রিয়তায় ভাটা লাগেনি। তিনি একজন সমাজসেবক ও জনদরদি নেতা হিসেবে এলাকায় সুনাম অর্জন করেছেন। তারা দুই ভাই দীর্ঘদিন ধরে এলাকায় রাজনৈতিক ও সামাজিকভাবে অবদান রেখে চলেছেন। আমি চাই চেয়ারম্যান সাহেব কে দলীয় পদ ফেরত দেওয়া হোক।
রক্ষিতপাড়া গ্রামের বাবর আলী বলেন, তারা রাজনৈতিকভাবে সক্রিয় থাকার কারণে অতীতে আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন সরকারের আমলে নানা ষড়যন্ত্রের শিকার হয়েছেন। এখন আবার তাদের বিরুদ্ধে স্থানীয় বিরোধী পক্ষের কতিপয় রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ ব্যক্তি স্বার্থ হাসিল করার জন্য নানা যড়যন্ত্র করে যাচ্ছে।
“ইউনিয়নবাসী সকলের এখন একটাই দাবি সব ষড়যন্ত্র মোকাবেলায় চেয়ারম্যান ডি. এম সাফিকুল ইসলাম সাফির বিকল্প নাই, তাই জনস্বার্থে তাকে তার দলীয় পদ পূর্ণ বিবেচনায় ফেরত দেওয়া হোক”।