
আন্দোলন দমনে ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনা সরকার আইনশৃঙ্খলা বাহিনীতে ভিনদেশিদের ঢুকিয়েছিল বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী।
আজ বৃহস্পতিবার আওয়ামী স্বৈরাচার বিরোধী গণঅভ্যুত্থানে নিহত সৈকত চন্দ্র দে ও পারভেজের পরিবারের প্রতি বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নির্দেশনা অনুযায়ী সমবেদনা ও আর্থিক সহযোগিতা প্রদান অনুষ্ঠানে তিনি এ মন্তব্য করেন।
তিনি বলেন, ‘আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ভেতরে তারা ভিনদেশি লোকদেরকে ঢুকিয়েছিল। আমরা এই কথাগুলো শুনেছিলাম শেখ হাসিনার আমলেই, কিন্তু অতোটা আমলেও নেইনি। কিন্তু এখন জিনিসটা অত্যন্ত সুস্পষ্ট হয়ে গেছে। গতকাল আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চিফ প্রসিকিউটার অ্যাডভোকেট তাজুল ইসলাম জানিয়েছেন, ভিনদেশি নাগরিকদের আইনশৃঙ্খলা বাহিনীতে ঢুকানো হয়েছে। কারণ তারা হিন্দিতে কথা বলছেন।’
রিজভী বলেন, ‘শেখ হাসিনা এই কাজগুলো করেছেন। কারণে নিজের দেশের লোকেরা যদি বিট্রয় করে। তাই আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর মধ্যে তিনি তার প্রিয় দেশের কিছু সদস্য রেখেছেন। তা না হলে বাংলাদেশের আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা হিন্দিতে কথা বলবে কেন? আমাদের আন্দোলন দমন করার জন্য শেখ হাসিনা হিন্দুদেরকে ভাড়া করে নিয়ে আসলেন। এটা কি বড় ধরনের অপরাধ নয়? আপনি মাসুম বাচ্চাদেরকে গুলি করেছেন, গুম করেছেন, রাজনৈতিক নেতাদেরকে আপনি ক্রসফায়ারে দিয়েছেন। রাজনৈতিক নেতাদেরকে নিজের গদি রক্ষার্থে ভিনদেশি মানুষদেরকে বাংলাদেশের আইনশৃঙ্খলা বাহিনীতে ঢুকিয়ে আপনি তাদেরকে দিয়ে কোমলমতি বাচ্চাদেরকে হত্যা করেছেন। আপনার মতো এতো বড় ঘাতক পৃথিবীতে আর কেউ ছিল বলে মনে হয় না।’
অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী বলেন, ‘শেখ পরিবার ভদ্রতা-শিষ্টাচারের কালচার শেখেনি। তাদের মধ্যে আছে শুধু ধৃষ্টতা,ঔদ্ধত্য ও অহংকার। এসব করতে গিয়েই তাদের ভয়াবহ পতন হয়েছে। আমরা কিন্তু শেখ হাসিনা ক্ষমতায় থাকতেই বলেছি, তার পতন হবে অত্যন্ত ভয়াবহ। উনি (শেখ হাসিনা) কানে লাগাননি, গ্রাহ্য করেননি। করবেন কেন? উনি দেখেছেন এই যে সাদ্দামের বেহেশত, নমরুদের বেহেশত। তিনি যে বানিয়েছেন তিনি সরে যাবেন কেন? এটা তিনি ভাবতেই পারেননি জনগণ ধেয়ে এসে তার সাধের গণভবনের দিকে। এটা তিনি কল্পনা করতে পারেননি বলেই আজকে তার ময়ূরের সিংহাসন মাটিতে লুটে পড়েছে।’
রিজভী বলেন, ‘দেশটা একেবারেই পারিবারিক সম্পত্তি বানিয়েছিল শেখ হাসিনা। তার ও তার বাবা এবং পরিবারের লোকজনদের বিরুদ্ধে কোনো কথা বলা যেত না। তার ঘনিষ্ঠ লোকজনরা লুটপাট করবে তার বিরুদ্ধে কথা বলা যেত না। জ্বালানি নেই কিন্তু বিদ্যুৎকেন্দ্র হচ্ছে বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলো কার। শেখ হাসিনার ঘনিষ্ঠ লোকজনের তার আত্মীয়-স্বজনের। জনগণের পকেট কেটে পকেটমার শেখ হাসিনা হাজার হাজার কোটি টাকা বিদেশে পাচার করেছে। এই কারণেই তিনি আন্দোলনের কথা শুনলেই আন্দোলনকারীদের ওপর বর্বর আক্রমণ চালিয়েছে।’
বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব বলেন,‘সজীব ওয়াজেদ জয় সুদূর আটলান্টিক থেকে মাঝে মধ্যে বাণী ছাড়েন। এর আগে কতো কথাই তো তিনি বলেছেন। আমি শুধু এখন এই কথাটাই বলবো, শেখ হাসিনা আপনার তো সন্তান দুইজন। একটা ছেলে, একটা মেয়ে। আপনি কিন্তু তাদেরকে ভদ্রতা-শিষ্টাচারের কালচার শেখাননি। এই সজীব ওয়াজেদ জয় দেশের তিনবারের প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে তুই বলে সম্বোধন করেছেন তার কয়েকটি বক্তব্যে। আমরা কিন্তু কখনোই শেখ হাসিনার বর্বরচিত আচরণের পরেও তাকে তুই বলে সম্বোধন করিনি। আপনি বলেই সম্বোধন করেছি।’
সেনাবাহিনীকে ধন্যবাদ জানিয়ে তিনি বলেন,‘একটা পর্যায়ে গিয়ে তারা জনগণের পক্ষে এসে দাঁড়িয়েছে। এখন পর্যন্ত আমরা যতটুকু স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলতে পারছি এটা ছাত্র-জনতার আন্দোলন ও তাদের আত্মত্যাগের কারণে। তাদের জীবন উৎসর্গের কারণে এবং সেনাবাহিনীর যে সমর্থন ছিল এটা অনেকটাই কাজে লেগেছে।’
এ সময় তার সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন, আমরা বিএনপি পরিবারের উপদেষ্টা ইঞ্জিনিয়ার আশরাফ উদ্দিন বকুল, আহ্বায়ক সাংবাদিক আতিকুর রহমান রুমন, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির সদস্য সচিব তানভীর আহমেদ রবিন, আমরা বিএনপি পরিবারের সদস্য সচিব কৃষিবিদ মিথুন, স্বেচ্ছাসেবক দলের সাবেক কেন্দ্রীয় নেতা মুস্তাফিজুর রহমান মনির, আরিফুর রহমান তুষারসহ