
জুলাই-আগস্টের গণহত্যার ঘটনায় মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে দায়ের করা মামলায় সাবেক পুলিশ প্রধান আবদুল্লাহ আল-মামুন ও ন্যাশনাল টেলিকমিউনিকেশন মনিটরিং সেন্টারের (এনটিএমসি) সাবেক মহাপরিচালক মেজর জেনারেল (অব) জিয়াউল আহসানসহ আট কর্মকর্তাকে আনুষ্ঠানিকভাবে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে।
আজ বুধবার আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চেয়ারম্যান বিচারপতি মো. গোলাম মর্তুজা মজুমদারের নেতৃত্বে তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনালে তাদের বিষয়ে শুনানি চলছে। এর আগে প্রিজনভ্যানে করে ৮ কর্মকর্তাকে ট্রাইব্যুনালে হাজির করা হয়।
যাদেরকে ট্রাইব্যুনালে হাজির করা হয়েছে তারা হলেন- সাবেক পুলিশ প্রধান চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন, এনটিএমসির সাবেক মহাপরিচালক মেজর জেনারেল (অব) জিয়াউল আহসান, ঢাকা জেলার সাবেক পুলিশ সুপার মো. আব্দুল্লাহ আল কাফি, ডিএমপির সাবেক ডিসি মো. জসিম উদ্দিন মোল্লা, ঢাকার সাবেক অতিরিক্ত সুপার (সাভার সার্কেল) মো. শাহিদুর ইসলাম, যাত্রাবাড়ী থানার সাবেক ওসি আবুল হাসান, গুলশান থানার সাবেক ওসি মাজহারুল হক এবং ঢাকা উত্তর ডিবির সাবেক পরিদর্শক মো. আরাফাত হোসেন।
এর আগে জুলাই-আগস্টের গণঅভ্যুত্থানে মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে গত ২৭ অক্টোবর আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে মামলাটি করেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম। সেদিন চিফ প্রসিকিউটর এই মামলার আসামিদের বুধবার (২০ নভেম্বর) ট্রাইব্যুনালে হাজির করার আবেদন জানালে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চেয়ারম্যান বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বে তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল প্রসিকিউশনের আবেদন মঞ্জুর করে এই ৮ কর্মকর্তাকে হাজির করতে নির্দেশ দেন।
একই সঙ্গে পুলিশের সাবেক ১৭ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করে তাদের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে হাজিরের নির্দেশ দেওয়া হয়।
গত ৫ আগস্ট শেখ হাসিনার নেতৃত্বধীন আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর এই ৮ কর্মকর্তা আত্মগোপনে ছিলেন। বিভিন্ন সময় তাদের গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে। আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের আদেশ মোতাবেক আজ তাদের আনা হয় ট্রাইব্যুনালে। এদের মধ্যে ছয়জনকে কাশিমপুর কারাগার থেকে আনা হয়েছে।বাকি দুজনের মধ্যে সাবেক পুলিশ প্রধান চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন এবং এনটিএমসির সাবেক মহাপরিচালক মেজর জেনারেল (অব.) জিয়াউল আহসানকে কেরানীগঞ্জ কারাগার থেকে ট্রাইব্যুনালে হাজির করা হয়।
প্রসঙ্গত, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র জনতার আন্দোলন নির্মূলে গত ৫ জুলাই থেকে ৫ আগস্ট পর্যন্ত সারাদেশে সংঘটিত গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে প্রসিকিউশন অফিসে ১২৫টির মতো অভিযোগ জমা পড়ে। এর মধ্যে গত ১৭ অক্টোবর শেখ হাসিনাসহ ৪৬ জনের বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারির মধ্য দিয়ে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের বিচারিক কার্যক্রম শুরু হয়।
পরে গত সোমবার জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার আন্দোলনে হত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় প্রথমবারের মতো ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ সরকারের মন্ত্রী, উপদেষ্টা, সচিব ও সাবেক একজন বিচারপতিসহ ১৩ জনকে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে হাজির করে গ্রেপ্তার দেখানো হয়।