
আট লাখ পঁচাত্তর হাজার টাকাসহ ডাকাত ধরে আলোচনায় নাসির উদ্দীন
ন্যাশনাল ডেস্ক:
আট লাখ পঁচাত্তর হাজার টাকাসহ ডাকাত ধরে আলোচনায় নাসির উদ্দীন। তিনি ঝিনাইদহ জেলার হরিণাকুণ্ডু উপজেলার ভেড়াখালি গ্রামের ফজলুর রহমানের ছেলে ও ড্রিম গ্রুপের চেয়ারম্যান এবং নিশান গ্রুপের ম্যানিজিং ডিরেক্টর। নাসির উদ্দীন বর্তমানে ঢাকা মিরপুর ১নং এর বাসিন্দা।
গতকাল মজিবর রহমান নামের এক ব্যাংক কর্মকর্তাকে মঙ্গলবার দুপুর দুইটায় রাজধানীর শ্যামলী নিউরোসায়েন্সেস হাসাপাতালের সামনে থেকে অপহরণ করে নিয়ে যাচ্ছিল একদল ডাকাত। সাথে নিয়ে নেয়া হয় ওই ব্যাক কর্মকর্তার কাছে থাকা আট লাখ পঁচাত্তর হাজার টাকা। এই খবর শুনতে পান ওই ব্যাংক কর্মকর্তার ভাতিজা নাসির উদ্দিন। তৎক্ষনাৎ তিনি গাড়ি নিয়ে বেরিয়ে পড়েন।
ডাকাতদের গাড়িটি ধরার জন্য পিছনে পিছনে ছুটতে থাকেন নাসির উদ্দিন। সাথে নেন আরও দুইজনকে। এসময় নাসিরকে ডাকাতদের গাড়ির অবস্থান জানানোসহ বিভিন্ন বিষয়ে দিকনির্দেশনা দিয়ে যাচ্ছিলেন এক ডিজিএফআই কর্মকর্তা। যখন নাসিরের গাড়ি মিরপুর বেড়িবাঁধ রোডের বিরুলিয়াসেতু পার হয়ে তুরাগ থানা কাছাকাছি ডাকাতদের কাছে চলে আসলো তখনই তিনি তার গাড়ি চালককে বললেন সামনে ব্যারিকেড দেয়ার জন্য। সেই সাথে গাড়ির ওপর লাফিয়ে পড়েন নাসির, সাথে তার দুই সহযোগী। ধরে ফেলেন এক ডাকাতকে।
গাড়িতে থাকা অন্যরা নেমে উত্তরা ১৬ নম্বর সেক্টরের দিকে দৌড়ে গিয়েছিল সেখান থেকেও একজনকে ধরলেন। সেখানে একজন পানিতে নেমে পড়লে নৌকা নিয়ে ধাওয়া দেয় নাসির। তাকেও ধরে ফেলতে সক্ষম হন তিনি। এভাবে করে তিন জন ডাকাতকে আটক করেন নাসির। আটককৃতরা হলেন, আব্দুস সালাম (৪০), শাহিন (৩৯) ও হাফিজুর (৩৯)। গতকাল মঙ্গলবার এ ঘটনা ঘটে।
তবে ডাকাতদের আটক করে বিপত্তিতে পড়েন নাসির। তার অভিযোগ, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অসহযোগিতার কারণে অনেক হয়রানি ভোগান্তি পোহাতে হয় তাকে। এক ফেসবুক পোস্টে তিনি বলেন, “আর্মিদের সহযোগিতায় তুরাগ থানায় নিলাম (ডাকাতদের)। বিধিবাম থানা পুলিশ মামলা নিচ্ছে না, অপেক্ষা করতে থাকলাম। ওসি সাহেব আমিনুর রহমান উনার সাথে কথা বললাম উনি জানালেন, এটা শেরেবাংলা নগর থানার মামলা ওখানে নিতে হবে। এই পর্যায়ে আসতে তখন মাগরিবের সময় হয়ে গেছে।
যাইহোক, ওসি সাহেব শেরেবাংলা নগর থানায় ফোন দিলেন। শেরেবাংলা থানা জানালো তাদের গাড়ি নাই তারা আসতে পারবে না। থানায় নিয়ে যেতে হবে তাহলে মামলা নিবে। ওসিকে বললাম উনারা দেখছি দেখছি বলে অবশেষে জানালেন, আমরা নিয়ে যেতে পারবো না আমাদের জীবনের ঝুঁকি আছে বাহিরে যাওয়া নিষেধ।”
নাসির বলেন, “কথা বললাম আর্মি দায়িত্বশীলদের সাথে তারা অপারগ। গাড়ি নাই ফোর্স নাই নানান জটিলতা। শুরু হলো উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সাথে যোগাযোগ। রেজাল্ট এক ব্রিগেডের দায়িত্ব এক থানায় সেই থানার বাইরে যেতে পারবে না। সকল চেষ্টা ব্যর্থ হলো। আর্মি সাপোর্ট পাওয়া গেল না। এক কর্মকর্তার সুপারিশে ১৮ নম্বর সেক্টর পর্যন্ত যেতে চাইলো আর্মি টিম কিন্তু পুলিশ তাতে রাজি না। তাদের জীবন বড় বিপদগ্রস্ত, আতঙ্কগ্রস্ত।
এভাবে কারও সহযোগিতা না পেয়ে নিজের জীবনের ঝুঁকি নিয়ে ডাকাতদের নিয়ে রাত তিনটার দিকে শেরেবাংলা থানায় যান নাসির। নাসির আক্ষেপ করে বলেন, ”অবশেষে বলতে চাই দুঃখ রয়েই গেল, প্রশাসন জনগনের প্রশাসনে পরিনত হবে কি কখনো?”