
চাঁদপুরের মতলব উত্তর উপজেলার ধনাগোদা নদী থেকে এক গৃহবধূর মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। নিহত গৃহবধূর নাম ফেরদৌসী আক্তার আন্না (২৫)। তিনি উপজেলার গাজীপুর গ্রামের মো. ইয়াছিনের স্ত্রী এবং নবুরকান্দি গ্রামের মৃত আব্দুল আউয়াল মেয়ে।
আজ শুক্রবার সকালে ফতেপুর পশ্চিম ইউনিয়নের নবুরকান্দি বেরিবাঁধের ট্রলার স্টেশনের কাছ থেকে নিহত ফেরদৌসীর মরদেহ উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনায় ফেরদৌসীর স্বামী মো. ইয়াসিনকে আটক করেছে পুলিশ।
স্থানীয় ও পুলিশ জানায়, স্বামী ইয়াসিনের সঙ্গে ফেরদৌসীর ভাত রান্না দেরি হওয়াকে কেন্দ্র করে কাটাকাটির হয়। এক পর্যায়ে ইয়াসিন রেগে ফেরদৌসীর গায়ে আগুন ধরিয়ে দেন এবং গলাটিপে হত্যা করে মরদেহ নদীতে ফেলে দেন। সকালে নদীর পাড়ে মরদেহ দেখতে পেয়ে থানায় খবর দিলে পুলিশ এসে মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য নিয়ে যায়।
নিহত ফেরদৌসীর বড় বোন মনোয়ারা বলেন, ‘আমার ছোট বোনের স্বামী অন্য এক মেয়ের সঙ্গে পরকীয়ার সম্পর্কে ছিল। আমার ছোট বোন এ বিষয়ে জানতে পেরে এবং পরকীয়ায় বাধা দিলে তাকে প্রতিনিয়ত মারধর করত। কিছুদিন আগেও পরকীয়া করতে গিয়ে ধরা পড়ে জরিমানা দিয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘শুক্রবার রাত ৩টার দিকে ইয়াসিন আমার মায়ের নাম্বারে ফোন দিয়ে বলে, আপনার মেয়েকে খুঁজে পাচ্ছি না, আপনার বাড়িতে গিয়েছে কিনা। আমরা ভোরে ওই বাড়িতে গিয়ে দেখি ঘরের দরজায় তালা দেওয়া। পরে লোকের মুখে শুনতে পাই, আমার বোনকে মেরে নদীর তীরে ফেলে রেখেছে।’
নিহত ফেরদৌসীর বড় ছেলে মো. আব্দুলাহ (৭) জানায়, ভাত খাইতে গেলে তার বাবা রাতে তার মাকে গ্যাসের চুলার আগুন দিয়ে জ্বালিয়ে দেয়। তারপর গলা টিপে হত্যা করে জামাকাপড় পরিবর্তন করে অটোরিকশায় করে তার মাকে নিয়ে গিয়ে নদীতে ফেলে দেয়।
মতলব উত্তর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. রবিউল হক বলেন, ‘খবর পেয়ে মতলব সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার মো. খাইরুল কবির এবং আমিসহ পুলিশের একটি টিম ঘটনাস্থল পরিদর্শন করি। মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য চাঁদপুর ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনায় নিহতের স্বামী মো. ইয়াছিনকে আটক করে কোর্টে পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনায় মামলার প্রস্তুতি চলছে।’