
সাকিববিহীন মিরপুর টেস্ট আজ শুরু
পাকিস্তানকে তাদেরই মাটিতে ধবলধোলাই করেছে বাংলাদেশ। কিন্তু ভারত সফরে গিয়েই কেটে গেছে মধুচন্দ্রিমা। দুই ম্যাচের টেস্ট সিরিজে দাঁড়াতেই পারেনি টাইগাররা। আজ থেকে শুরু হতে যাওয়া দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষের সিরিজ বাংলাদেশের জন্য ফেরার উপলক্ষ।
সাকিব দেশে ফেরার মানসিক প্রস্তুতি
নিয়েছিলেন। শেষ পর্যন্ত সিদ্ধান্ত পাল্টাতে হয়েছে তাকে। এই টেস্টে তিনি যেন না থেকেও আছেন! গতকাল সিরিজ পূর্ব সংবাদ সম্মেলনজুড়ে আলোচনায় ছিলেন সাকিব। প্রসঙ্গ ছিল বরখাস্ত হওয়া চ-িকা হাথুরুসিংহেকে নিয়েও। নতুন কোচ ফিল সিমন্সের অধীনে নতুন এক যাত্রা শুরু করতে যাচ্ছে টাইগাররা।
এ যাত্রায় মাঠের বাইরের ঘটনা থেকে মনোযোগ সরিয়েছে ক্রিকেটাররা। বাংলাদেশ অধিনায়ক নাজুমল হোসেন শান্তর দাবি অন্তত এমনই। সংবাদ সম্মেলনে তার দাবি, ‘আমরা বাইরের বিষয়গুলো নিয়ে ভাবছি না। আমাদের সমস্ত মনোযোগ ম্যাচকে ঘিরে। আমরা এর আগে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে জিততে পারিনি। তাই এটি আমাদের দলের জন্য ভালো সুযোগ। কারণ, আমরা ঘরের মাঠে খেলছি।’
যে কোনো সংস্করণে বাংলাদেশের চেয়ে এগিয়ে থাকে দক্ষিণ আফ্রিকা। কিন্তু এবারের প্রেক্ষাপট অনেকটাই ভিন্ন। প্রোটিয়াদের বিপক্ষে সিরিজ জয়ের আশা দেখছে টাইগাররা। নতুন ক্যারিবীয় কোচ সিমন্স শুনিয়েছেন আশার বাণী। গতকাল বাংলাদেশ অধিনায়ক নাজমুলও সুর মেলালেন কোচের সঙ্গে। দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে জয়ের বিরাট সুযোগ দেখছেন তিনি।
নেপথ্য কারণ আছে কয়েকটি। প্রথমত, ১০ বছর ধরে উপমহাদেশের মাটিতে জয় পায়নি দক্ষিণ আফ্রিকা। দ্বিতীয়ত, প্রায় অনভিজ্ঞ দল নিয়ে বাংলাদেশ সফরে এসেছে দক্ষিণ আফ্রিকা। এই দলের কেবল একজনেরই বাংলাদেশের মাটিতে টেস্ট খেলার অভিজ্ঞতা আছে। সেই তিনি নিয়মিত অধিনায়ক টেম্বা বাভুবা। এই ব্যাটার অবশ্য চোটের কারণে প্রথম ম্যাচও খেলতে পারছেন না। তার পরিবর্তে মিরপুর টেস্টে আফ্রিকানদের নেতৃত্ব দেবেন এইডেন মার্করাম।
বাংলাদেশ জয়ের সুযোগ দেখছে আরও একটি কারণে। মিরপুরের উইকেট বরাবরই স্পিনবান্ধব। উইকেট কিছুটা ধীরগতির হওয়ায় স্পিনাররা বাড়তি সুবিধা পেয়ে থাকে। কিন্তু এসব স্পিনারকে মোকাবিলা করার সামর্থ্য দক্ষিণ আফ্রিকার কমই আছে। তবে একাদশে যে স্পিনারদের আধিক্য রাখবে তারা এটা এক প্রকার নিশ্চিত। সব মিলিয়ে বাংলাদেশের জন্য এই সিরিজ সুযোগ হয়ে এসেছে। গতকাল অধিনায়ক নাজমুল যেমনটি বলেছেন, ‘এর আগে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে আমরা জিততে পারিনি। ঘরের মাঠে খেলা হওয়ায় এবারের আমাদের সামনে দুর্দান্ত সুযোগ রয়েছে।’ তবে অনভিজ্ঞ দক্ষিণ আফ্রিকাকে হালকাভাবে নিচ্ছেন না তিনি, ‘অভিজ্ঞ না হলেও তারা খুবই ভালো দল বলে আমি মনে করি। আমরা পাকিস্তানে ভালো করেছি, কিন্তু ভারতে ভালো করতে পারিনি। আমার মতে আমাদের দল টেস্টে এখন ভালো অবস্থায় আছে। যদি পরিকল্পনাগুলো ভালোভাবে কাজে লাগাতে পারি তাহলে এটা ভালো একটা টেস্ট ম্যাচ হবে। প্রতিটি সেশনেই আধিপত্য বিস্তার করা খুব গুরুত্বপূর্ণ হবে।’
লাল বলের ক্রিকেটে প্রোটিয়াদের বিপক্ষে বাংলাদেশের রেকর্ড ভালো নয়। ১৪ টেস্টের বিপরীতে টাইগাররা হেরেছে ১২টিতে। অন্য দুটি ম্যাচ যে ড্র হয়েছে সেটিও বৈরী প্রকৃতির কারণে। এবার দুঃখ ঘোচানোর সুযোগ। তাই বোলারদের দিকে তাকিয়ে আছেন টাইগার দলপতি নাজমুল। তিনি বলেছেন, ‘সাধারণত মিরপুরে বড় ভূমিকা রাখে স্পিনাররা। তাদের বেশি কিছু করার চেষ্টা করতে হবে না। নিজেদের দায়িত্বটা যথাযথভাবে পালন করতে পারলে দলের জন্যই ভালো হবে। যথার্থ প্রক্রিয়ার মাধ্যমে আমাদের ২০ উইকেট নেওয়ার উপায় খুঁজে বের করতে হবে, তাহলেই সহজ হয়ে যাবে।’