
ভারতীয় আগ্রাসনের উপযুক্ত জবাব পাকিস্তান দেবে বলে জানিয়েছেন দেশটির প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ। একই সঙ্গে নরেন্দ্র মোদি সরকারের উগ্র আচরণের দিকেও ইঙ্গিত করেছেন তিনি। শুক্রবার (২৭ সেপ্টেম্বর) নিউইয়র্কে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের ৭৯তম অধিবেশনে বক্তব্য দেয়ার সময় এসব কথা জানান শাহবাজ।
২১ মিনিটের বক্তব্যে শাহবাজ শরিফ ফিলিস্তিন ও কাশ্মির বিরোধ, ইউক্রেন যুদ্ধ, জলবায়ু পরিবর্তন, দারিদ্র্য বৃদ্ধি এবং জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে সৃষ্ট ঋণের বোঝাসহ একাধিক আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক ইস্যু নিয়ে আলাপ করেছেন।
পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী বলেন, আজ আমরা বিশ্বব্যবস্থার প্রতি সবচেয়ে ভয়াবহ চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হচ্ছি—গাজায় ইসরায়েলের গণহত্যার যুদ্ধ, ইউক্রেনে বিপজ্জনক সংঘাত, আফ্রিকা ও এশিয়াজুড়ে ধ্বংসাত্মক সংঘাত, ভৌগোলিক-রাজনৈতিক উত্তেজনার বৃদ্ধি, সন্ত্রাসবাদের পুনরুত্থান, দ্রুত দারিদ্র্য বৃদ্ধি, শ্বাসরুদ্ধকর ঋণের বোঝা এবং জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব। আমরা একটি নতুন শীতল যুদ্ধের শীতলতা অনুভব করছি।
গাজার বর্তমান পরিস্থিতির সঙ্গে ‘ভারত কর্তৃক অবৈধভাবে দখলকৃত জম্মু ও কাশ্মিরের’ তুলনা করে শাহবাজ বলেন, অধিকৃত অঞ্চলের জনগণ শতাব্দীর পর শতাব্দী ধরে তাদের স্বাধীনতা ও আত্মনিয়ন্ত্রণের অধিকারের জন্য সংগ্রাম করছে।
তিনি বলেন, শান্তির দিকে এগিয়ে যাওয়ার পরিবর্তে ভারত কাশ্মির বিরোধ সম্পর্কে নিরাপত্তা পরিষদের প্রস্তাব বাস্তবায়নের প্রতিশ্রুতি থেকে সরে এসেছে। এসব প্রস্তাব কাশ্মিরিদের মৌলিক আত্মনিয়ন্ত্রণের অধিকার প্রয়োগের জন্য গণভোটের আদেশ দেয়।
পাক প্রধানমন্ত্রী বলেন, ২০১৯ সালের ৫ আগস্ট থেকে ভারত একতরফা অবৈধ পদক্ষেপ নেয়া শুরু করেছে, যা দেশটির নেতারা অশুভভাবে দখলকৃত অঞ্চলের জন্য একটি চূড়ান্ত সমাধান বলে অভিহিত করে।
তিনি বলেন, প্রতিদিন ৯ লাখ ভারতীয় সেনা কাশ্মিরেররের দখলকৃত জনগণকে, দমনমূলক ব্যবস্থা, দীর্ঘস্থায়ী কারফিউ, বিচার বহির্ভূত হত্যাকাণ্ড এবং হাজার হাজার তরুণ কাশ্মীরিকে অপহরণের মাধ্যমে ভীত সন্ত্রস্ত করে।
তিনি বলেন, ভারত কাশ্মিরের জমি এবং সম্পত্তি দখল করছে। বহিরাগতরা দখলকৃত জম্মু ও কাশ্মিরের বসতি স্থাপন করছে, মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠকে সংখ্যালঘুতে রূপান্তর করতে তাদের কুৎসিত নকশা হাতে নিয়েছে। এই পুরোনো কৌশল সব দখলদার শক্তি ব্যবহার করেছে। তবে এটি সর্বদা ব্যর্থ হয়েছে। জম্মু ও কাশ্মিরে, আল্লাহর রহমতে, এটি ব্যর্থ হবে!
কাশ্মিরে ভারতের নৃশংস দমননীতি ও নিপীড়নের সমালোচনা করে তিনি বলেন, এই ধরনের পদক্ষেপ নিশ্চিত করেছে যে বুরহান ওয়ানির উত্তরাধিকার কাশ্মিরিদের সংগ্রাম ও আত্মত্যাগকে অনুপ্রাণিত করতে থাকবে
ভারত সামরিক সক্ষমতা ব্যাপকভাবে প্রসারিত করছে উল্লেখ করে শাহবাজ বলেন, ভারতের নেতারা প্রায়ই নিয়ন্ত্রণ রেখা (এলওসি) অতিক্রম করে আজাদ কাশ্মির দখলের হুমকি দিয়েছে। আমি কোনো দ্বিধা ছাড়াই বলতে চাই যে পাকিস্তান যেকোনো ভারতীয় আগ্রাসনের জবাব অত্যন্ত শক্তভাবে দেবে।